October 26, 2024, 2:16 pm

সংবাদ শিরোনাম :
ডেঙ্গু প্রতিরোধে দক্ষিণ খান বিএনপি’র ভিন্ন রকম ক্যাম্পেন  শেখ হাসিনাকে ৫৭ বার ফাঁসি দিলেও ক্ষতি পূরণ হবে না: সেলিম উদ্দিন। টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় আ’লীগ নেতাসহ ৯ জনের সদস্যপদ বাতিল পাইকগাছায় ঘুর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে অসহায় দিনমজুর সহিলের মাথা গোজার ঠাইটুকু হারিয়ে ফেলেছে খুলনা জেলা কারাগারে হাজতি ও কয়েদির সাথে মারামারি ৭ম আন্তর্জাতিক Flight Safety Seminar 2024 এর সমাপনী অনুষ্ঠান বিগত ১ বছরে দুবার ঝড়ে কপাল পোড়েছে কয়রা বাসির দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তবুও নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিনকে গাজীপুরে পদায়ন সাবেক কমিশনার হারুনের দাপটে বসত ভিটে ছড়া এক দম্পতি   খুলনা কয়রায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত

দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে পলাতক সর্বহারা দলের শীর্ষ নেতা, পাবনা জেলার চাঞ্চল্যকর জলিল ও দিপু হত্যা মামলার পলাতক আসামী ওয়ারেছ (৪৫)’কে মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

তামান্না আক্তার হাসিঃ র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ রাত ১১:০০ ঘটিকায় মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানার চাঞ্চল্যকর জলিল হত্যা এবং সাথিয়া থানার চাঞ্চল্যকর দিপু হত্যা মামলার পলাতক আসামী ওয়ারেছ (৪৫), জেলাঃ পাবনা’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী পাবনা জেলার সর্বহারা দলের “নকশাল” গঠনকালীন সদস্য হয় এবং উক্ত সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিতে থাকে। আসামী ওয়ারেছ এর সর্বহারা দলের সাথে পাবনা জেলার অন্যান্য সর্বহারা দলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়ই তাদের মধ্যে বিরোধ লেগে থাকত। উক্ত বিরোধের জেরে গত ০৮ আগস্ট ১৯৯৯ তারিখে গ্রেফতারকৃত ওয়ারেছ স্বদলবলে পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানার অন্য সর্বহারা দল আব্দুল জলিল গ্রæপের সাথে আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে জলিল গ্রুপের গ্রুপ লিডার আব্দুল জলিলকে ওয়ারেছ গ্রুপের গ্রুপ লিডার ওয়ারেছ নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং আত্মগোপনে চলে যায়। উক্ত হত্যার ঘটনায় পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানায় হত্যার প্রধান আসামী ওয়ারেছসহ অজ্ঞাতনামা মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়, যার মামলা নং- ০১(৮)/১৯৯৯, ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০। এছাড়াও ওয়ারেছ পাবনা জেলার সাথিয়া থানার চাঞ্চল্যকর দিপু হত্যার সাথেও সরাসরি জড়িত হয়, সেই মামলায়ও সে একজন পলাতক আসামী। যার মামলা নং-১৩ তারিখ ১৯/১১/২০০৯, জিআর নং-১৭৮/২০০৯, ধারা-৩০২/১০৯/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০।

১৯৯৯ সালের শেষের দিকে আত্মগোপনে থাকার জন্য ওয়ারেছ ঢাকায় চলে আসে। সে সাভারসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকে এবং পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য কৌশলে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ১৩ মাস অবস্থান করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য ক্রমাগতভাবে সে পেশা পরিবর্তন করে। ২০২০ সালে দেশে ফিরে সাভারে অবস্থানরত স্ত্রী-সন্তানদেরকে নিয়ে সেখানে দুধের ছানা সাপ্লাই এর কাজ শুরু করে। সর্বশেষ সাভারে মাইক্রো গাড়ীর ড্রাইভার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলো। আসামী ওয়ারেছ নিজ পরিচয় গোপন করে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন এলাকায় এসে বিবাহ করে।

তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, উক্ত আসামী ছদ্মবেশে ঢাকা মহানগরীর মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অবস্থান করছে যার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আসামী ওয়ারেছকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী সর্বহারা জলিল গ্রুপের গ্রুপ লিডার আব্দুল জলিলকে হত্যা এবং দিপু হত্যা মামলার সাথে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করেছে। এছাড়াও তার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

আসামীর জীবন বৃত্তান্তঃ আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী ১৯৭৮ সালে পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানাধীন শিবপুর এলাকায় জন্মগ্রহণ করে। আনুমানিক ২২ বছর বয়সে অবিবাহিত থাকা অবস্থায় আসামী মোঃ ওয়ারেছ পাবনা জেলার সর্বহারা দল (স্থানীয় ভাষায় ‘নকশাল’) গঠনকালীন সদস্য হয় এবং উক্ত সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিতে থাকে। সর্বহারা দলের নেতা থাকাকালীন সে পাবনা জেলার আটঘরিয়া এবং সাথিয়া থানায় একাধিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় তার নামে আটঘরিয়া ও সাথিয়া থানায় হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রুজু হয়। আসামী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাকি দিয়ে আত্বগোপনের উদ্দেশ্যে পাবনা থেকে পালিয়ে প্রথমে সাভার পরবর্তীতে আশুলিয়া, ধামরাই, গাজীপুর, বাড্ডাসহ পূরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাকি দিতে আসামী ছদ্মবেশে ক্রমাগত তার অবস্থান পরিবর্তন করে আসছিল। আসামী সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পরিচয় গোপন করে বিয়ে করে এবং ব্যক্তিগত জীবনে সে ০২ জন কন্যাসন্তানের জনক। ১৯৯৯ সালের পর থেকে আসামী আর কোনোদিন পাবনা জেলায় যায়নি।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হন্তান্তর করা হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন